Scabies (বাংলায় খোশ,পাচড়া) বর্তমানে বাংলাদেশে একটি ভয়াবহ সংক্রামক ব্যাধি হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে……..
এটি Sarcoptes scabiei নামক ক্ষুদ্র পরজীবী দ্বারা সৃষ্ট, যা শরীরের তীব্র চুলকানি, জ্বালাপোড়া, অস্বস্তি, এবং রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়..
স্ক্যাবিস একটি ছোঁয়াচে রোগ Sarcoptes scabiei নামক ক্ষুদ্র পরজীবীর সংক্রমণের মাধ্যমে এ রোগটি ছড়ায়। পরজীবীটি মানুুষের চামড়ার নীচে ডিম পাড়ে, বাচ্চাফুটায় এবং বিশেষ করে রাতে ঘুমের সময় চামড়ার নিচে চলাচল করে, সেজন্য তীব্র চুলকানি হয়। চুলকানি সাধারণত রাতের বলা তীব্রতর হয়।
কোথায় হয়…….



কনুইয়ের উপর, পেটের পাশে, এমনকি কোমরের নিচে, আঙুলের ফাঁকে, কনুইয়ে, বগলে, কোমরে, বুকের নিচে ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা যায়।

একই বিছানায় শুইলে অন্যের দেহেও এই চুলকানি ছড়িয়ে পড়ে।
***চুলকাতে চুলকাতে ঘুম হারাম হয়ে যায়, রাত যতো বাড়ে চুলকানীও ততোই বাড়তে থাকে।
বাচ্চাদের স্কুল, মাদ্রাসা, থেকে সংক্রমিত হয় এবং পরীবারের সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও ঘনবসতি, শীতকালে, গার্মেন্টস কর্মীদের মধ্যে এই রোগটির প্রাদুর্ভাব বেশি লক্ষণীয়।
এ রোগটি নিরাময়যোগ্য…….
১। রোগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে। যেমন, রোগটি ছোঁয়াচে এবং সবার চিকিৎসা একত্রে প্রয়োজন।
২। সারা শরীরে ওষুধ মাখতে হবে (যেমন: 5% permethrin যা বাজারে Scabex or Permisol cream নামে পাওয়া যায়) এবং 12 ঘন্টা রেখে সকালে গোসল করে ফেলতে হবে প্রতি সপ্তাহে ব্যবহার করতে হবে এভাবে মোট চার সপ্তাহ সর্বোচ্চ। এছাড়াও বাজারে Scabnil or E-scab বার নামক সাবান পাওয়া যায় যা দিয়ে পরিবারের সবাই গোসল করবে ১মাস।
৩। নখ কাটতে হবে এবং প্রতিদিন গোসল করতে হবে।
৪। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের একই চিকিৎসা একত্রে শুরু করতে হবে।
৫। জামা কাপড় বিছানার চাদর ভালোভাবে গরম পানিতে ধুয়ে নিতে হবে এবং তারপর ইস্ত্রী করতে হবে।
৬। যেকোনো কাপড় পরার পূর্বে ইস্ত্রী করে পরতে হবে এভাবে দুই সপ্তাহ চলবে কাপড়ের চিকিৎসা।
৮. SCABIES চিকিৎসায় কোনরকম Steroid বা Steroid জাতীয় ক্রিম ব্যবহার করা যাবে না। নয়তো পরবর্তীতে এটা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।
৯. Scabies এর চুলকানি যেতে সময় লাগতে পারে তাই এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ ছয় থেকে আট সপ্তাহ কন্টিনিউ করা লাগতে পারে।
১০.সকলের সহযোগিতা এবং সচেতনতাই Scabies থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব।
১১। সেকেন্ডারি ইনফেকশন এর ক্ষেত্রে অবশ্যই এন্টিবায়োটিক নিতে হবে।
****রাস্তাঘাটে মলম বিক্রেতা বা ফার্মেসী ওলা বা ম্যাটস্, গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তারের পরামর্শ বা চিকিৎসা নিবেন না। ওষুধের দোকান থেকে যত্রতত্র এলার্জির কথা বলে ওষুধ কিনে খাবেন না।
উল্লেখ্য যে, হাতুড়ে ও ফার্মেসী ওলা রা এটিকে করোনা ভ্যাক্সিন নেয়ার পর এলার্জি হচ্ছে বলে মুড়ির মতো নামি বেনামি মেডিসিন বিক্রি করছে এমনকি স্টেরয়েড ইনজেকশন ও দিচ্ছে যার কারনে রোগটি দিন দিন ভয়াবহ অবস্থা নিচ্ছে।
রোগটি খুব দ্রুত একজন থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকেও সংক্রমিত হয়। যেমন, একসাথে থাকলে, আক্রান্ত ব্যাক্তির কাপড়, বেডশিট, চিরুনি, গামছা ইত্যাদি ব্যবহার করলে।
করণীয়……
->ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
->আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত পোশাক, বিছানার চাদর ইত্যাদি আলাদা রাখুন।
-> ডার্মাটোলোজিস্ট বা স্কিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং আশেপাশের মানুষদের সচেতন করুন।
জাতীয় পর্যায়ে প্রয়োজন:
সরকারিভাবে জনগণকে সচেতন করা। আক্রান্ত পরিবারগুলোকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা।
চিকিৎসা :
5% Permithrin cream
Permithrin soap
10-25% Benzyl benzoate emulsion
5-10% Sulfur ointment
চুলকানী কমাতে Antihistamine (Fexofenadine, Rupatidine etc)
সবচেয়ে ভালো হয় স্কিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিলে…..
Scabies প্রতিরোধে আমরা সবাই একসাথে সচেতন হই এবং অন্যদের সহযোগিতা করি।
Dr. Rezbaul Hasan Royal