হার্ট অ্যাটাক হলে কিভাবে বুঝবেন এবং কি করবেন?
বুকের বাম পাশে আমাদের সকলের একটা মূল্যবান অর্গান থাকে, তা হলো, আমাদের হার্ট। ৩০০গ্রাম ওজনের এই অর্গানটি প্রতি মিনিটে ৭২ টা বিটস্ দেয়। অর্থাৎ আগামী ২৪ ঘন্টায় আপনার হার্ট ১ লক্ষবার বিটস্ দিবে। একটাবার চিন্তা করে দেখুন, এই মূল্যবান হার্ট টি যদি একটু রেস্ট নিতে চায় তাহলে….আপনি কিন্তু শেষ! :'(
কোনো সমস্যা বোধ করছেন না, বুকে ব্যথা করে না কখনো, অনেক পরিশ্রমও করতে পারেন, তার মানে কোনো দিন হার্ট অ্যাটাক হবে না—এমন মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে ঝুঁকি কতটুকু আছে, তা জেনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে অকালমৃত্যু বা কঠিন পরিণতি এড়ানো যায়। তাই ৪০ এর পর…প্রতি ৬ মাসে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
নিম্নোক্ত সমস্যা গুলো দেখা দিলে কোনো অবহেলা নয়……সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে হবে….
-> বুকের মধ্যে চাপ বোধ হওয়া, যা কয়েক মিনিটের বেশি সময় ধরে থাকে। ব্যথাটা মাঝেমধ্যে চলে যায়, আবার ফিরে আসে। একটা অস্বস্তিকর চাপ ও ঝাঁকুনি অনুভূত হয়।
-> বাহু, পিঠ, ঘাড়, চোয়াল অথবা পাকস্থলীতেও অস্বস্তি অনুভূত হয়। ব্যাথা হওয়া।
-> অনেক সময় বুকে অস্বস্তির সঙ্গে সঙ্গে শ্বাস ছোট হয়ে আসে।
->ঘাম দিয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব বা হালকা মাথাব্যথা, পিঠে বা চোয়ালে ব্যথা হতে পারে।
এছাড়াও, ডায়াবেটিস এর রোগী, চেইন স্মোকার, ইমোশনাল স্ট্রেস( হঠাৎ করে কাছে আত্নীয়ের মৃত্যু), মানসিক চাপ, অতিরিক্ত খাবার খাওয়া…..ইত্যাদি থাকলে এবঙ উপরের সিম্পটম গুলো থাকলে….দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
হাসপাতালে আসতে হবে গোল্ডেন আওয়ারে……..
হার্ট অ্যাটাকের পর প্রথম এক ঘণ্টা হলো গোল্ডেন আওয়ার, অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসকের জরুরি চিকিৎসা নিতে পারলে রোগীর প্রাণ রক্ষা প্রায় নিশ্চিত করা সম্ভব।
এখন প্রশ্ন হলো, কীভাবে বুঝব হার্ট অ্যাটাক, না গ্যাসের কারণে বুকব্যথা? এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে অনেক সময় চলে যায়। বুকে ব্যথা চরমে উঠলে রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
হাসপাতালে নেওয়া আগে…..উপরোক্ত রিস্ক ফ্যাক্টর ও সিম্পল গুলো থাকলে….রোগীকে…
Tab. Aspirin 75mg এর ৪(চার) টা ট্যাবলেট + Tab. Clopidogrel 75mg এর ৪(চার) টা ট্যাবলেট সাথে সাথে খাওয়ানো যেতে পারে। এই দুটি ট্যাবলেট কম্বিনেশন হিসেবে Clopis As, Lopirel plus, Anclog plus, plagrin plus (75+75)mg পাওয়া যায়…..যা ৪ টা খাওয়ালেই হবে…..এবং সাথে…. Nitroglycerin ( GTN, Anril, Nidocard) spray জিহ্বার নিচে…২ চাপ দিয়ে দিলে রোগী আরাম পাবেন এবং হাসপাতালে যাওয়ার সময় টুকুতে অনেকটাই মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যায়…..
হাসপাতালে পৌছালে….সাথে সাথে, ECG, Toponin-I ( 4 ঘন্টা পর), CBC, RBS, S. Creatinine(কিডনীর পরীক্ষা…. সহ প্রয়োজন অনুযায়ী এই পরীক্ষা গুলো করে….পরবর্তী ব্যাবস্থা নিবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
সর্বোপরী সুস্থ থাকুন। ভালো থাকুন…..
Dr. Rezbaul Hasan Royal