আজ ভালোবাসার এক অতুলনীয় গল্প শোনাবো….
ওয়াইফ অসুস্থ দীর্ঘদিন ধরে।
দুটো কিডনী তার বিকল হয়েছে।
প্রায় দৌড়ান হাসপাতালে। ৭/৮ বছর পর যখন আর
কোনোভাবেই কাজ হচ্ছিলো না, তখন, নিজের একটা কিডনী দিয়ে দিলেন স্ত্রী কে…….।
জীবনের শুরুটা করেছিলেন অনেক কষ্টে, সারাজীবন তাঁর স্ত্রী তাঁকে সহযোগিতা করেছেন পাশে থেকে….। খুব ছোট বেলায় তাদের বিয়ে হয়। চার সন্তানের জনক-জননী তারা।
বিবাহিত জীবনের ৪৫ বছর হতে চলেছে, তাঁদের। এই দীর্ঘ সময়, কখনো খেয়ে, কখনো বা না খেয়ে কেটেছে দিনগুলো। কিন্তু, ভালোবাসার কমতি ছিলো না, কখনো।
বৃদ্ধ চাচা-চাচী ফোকলা দাঁতে, হেসে দিয়ে বলেন…..মানুষ, খেয়ে মরে, না খেয়ে মনে না!
আর ভালোবাসা না থাকলে তো, জীবনটাই বৃথা। তাঁরা ভালোবাসার স্বাদ পেয়েছেন।
ক’জনে বা পায়?
আজকাল তো, বিয়ের পর ৪/৫ বছরও একিছাদের নিচে থাকে না, মানুষ। ঝগড়াঝাঁটি, মারামারি, কাটাকাটি করে…..জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্তটি নিয়ে আলাদা হয়ে যায়…।
তারপর শুরু হয় জীবনের নতুন অধ্যায়…. তখন, বুঝতে পারে, কি ভুলটাই না করেছেন তারা!
এই চাচা-চাচী ৪৫ বছর কাটিয়েছেন একসাথে, একটাবারের জন্যও স্বামীকে অবজ্ঞা, অবহেলা করেন নি, একদিনের জন্যও কষ্ট দিয়ে কথা বলেন নি। আজ তাইতো, তাঁর জীবনের কঠিন মুহূর্তে স্বামী নিজের সবচেয়ে মূল্যবান অর্গান দিয়ে স্ত্রী কে সুস্থ করলেন।
একটি কিডনি দান করলেন। বাঁচলে দুজন একসাথে, মরলে দুজন একসাথে।
এইরকম স্ত্রীর জন্য এইটুকু তো অবশ্যই প্রাপ্য তাই না বলেন?
তাঁদের ভালোবাসার গল্প আজ পুরো হসপিটালের মুখে মুখে।
এরকম আরো অনেক গল্পের স্বাক্ষী হয়ে যাই আমরা।
চাচীর কিছু হলেই, চাচা হাতদুটো ধরে সান্ত্বনা দেয়, মাথা টিপে দেয়, সারাজীবন পাশে থাকার অঙ্গীকার করে বার বার…..ওদের মা-বাবা, দাদা-দাদী, দু বংসের কেউ বেঁচে নেই। সন্তানরাও যে যাকে নিয়ে ব্যাস্ত। কিন্তু ওরা দুজন দুজনের।
জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ওরা উপভোগ করেছে। ভালোবাসার স্বাদ নিয়েছে।
শুনেছি, স্বামী সন্তুষ্ট থাকলে নাকি স্ত্রী জান্নাতি হয়। আর মহানবী (স:) বলেছেন, যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম সেই উত্তম পুরুষ।
……….আল্লাহ তাদের দুজন কে এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের শেষে, আখিরাতে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান করুন। আমিন।
Dr. Rezbaul Hasan Royal

Leave a Reply